মঙ্গলবার, ২৬ অগাস্ট ২০২৫, ০৭:১৮ অপরাহ্ন

বাঘায় মৌসুমের শেষ সময়ে জমে উঠেছে কাঁঠালের বাজার

বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধি::

প্রতি বছরের মত এবারও রাজশাহীর বাঘার বিভিন্ন বাজারে জমে উঠেছে কাঁঠালের হাট। সপ্তাহের প্রায় প্রতিদিন বিক্রেতারা কাধে, সাইকেলে, ঠেলা, রিকশা ও ট্রাক রিজার্ভ করে কাঁঠালসহ অন্যান্য মৌসুমি ফল হাটে এনে বিক্রি করছে। আমের রাজধানী খ্যাত বাঘার ফল খেতে সুস্বাদু হওয়ায় তার সুনাম ও সুখ্যাতি দেশের সর্বত্রই। খেতে ভালো ও সুস্বাদু হওয়ায় কাঁঠালের চাহিদাও ব্যাপক। তাই ক্রেতা-বিক্রেতার সমাগমে এখন সরগরম হয়ে ওঠেছে কথিত কাঠালের বড় বাজার, বাঘা উপজেলার আড়ানি বড়াল নদের সড়ক সংলগ্ন তালতলা বাজার থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার কাঁঠাল চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। সপ্তাহের দুইদিন-শনিবার ও মঙ্গলবার হাট বসে।

সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার দিঘা, বাউসা, মনিগ্রাম, বাঘা, চন্ডিপুর, গড়গড়ি,রুস্তমপুর ও আড়ানি পৌর এলাকাসহ পাশ্ববর্তী চারঘাট উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের বাগানিরা কাঁঠালের স্তুপ সাজিয়ে বসে আছেন বিক্রির অপেক্ষায়। প্রতিটি স্তুপে রয়েছে শ শ কাঁঠাল। পাইকারি ও খুরচা ব্যবসায়ীরা এসব কাঁঠাল কিনে ট্রাকে, ভটভটিসহ অন্য যানবাহনে নিয়ে যাচ্ছেন নাটোর,ঈশ্বরদী,পাবনাসহ বিভিন্ন এলাকাগুলোতে। প্রকারভেদে প্রতিটি কাঁঠাল বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ১০০ টাকায়। যা অন্য এলাকায় এসব কাঁঠালের দাম অনেকগুণ বেশি।

দিঘা গ্রামের কাঁঠাল বাগান মালিক মো.শুকুর জানান, এবার কাঁঠালের ফলন ভালো হলেও বিক্রি হচ্ছে গত বছরের অর্ধেক দামে। পাইকারদের অনেকে বাগান থেকেই কাঁঠাল ক্রয় করে। করোনার কারণে দেশের অনেক জেলা থেকে পাইকার আসতে পারছেন না। মন্দাভাব বিরাজ করছে জাতীয় ফল কাঁঠালের বাজারে। এ বছর বড় ধরনের লোকসানও গুনতে হবে। তবে মৌসুমের শেষের দিকে কাঁঠালের দাম কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে।

দিঘা গ্রামের কাঁঠাল ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘ছোট-বড় কোনো হিসাব হয় না। প্রতিটি কাঁঠাল গড়দওে বিক্রি করেন পাইকারদের কাছে। কাঁঠালের শেষ মৌসুমে বাজারে কাঁঠালের ভালো দাম পাওয়া গেলেও আগে কম দামে বিক্রি করতে হয়েছে। আড়ানি বাজার ইজারাদার একরমুল হক সনদ জানান, মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে কাঁঠাল বেচাকেনা বিক্রি শুরু হয়েছে। করোনার কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবং সামাজি দুরত্ব বজায় রেখে বাজারে কাঁঠাল বেচাকেনা চলছে।

বাঘা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিউল্লাহ সুলতান জানান, মৌসুমী ফল কাঁঠালের রয়েছে আর্থিক গুরুত্ব। কৃষকরা মৌসুমে কাঁঠাল বিক্রি করে সংসার পরিচালনার জন্য আয়ের একটি বড় অংশ অর্জন করে থাকে। কাঁঠাল বিক্রি থেকে আর্থিক ভাবে লাভবান হন চাষী থেকে শুরু করে ভ্যানচালক, রিক্সাচালক, বেপারী ও বাজার ইজারাদার। চলতি মৌসুমে বাঘায় ৫৭ হেক্টর কাঁঠাল চাষ হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর কাঁঠালের ফলন বেশ ভালো হয়েছে।

তিনি জানান, এই বছরের মধ্যে রাজশাহীতে ফল ও সবজি রপ্তানি প্রক্রিয়াজাত করতে একটা কোয়ারেন্টাইন কেন্দ্র স্থাপন করা হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। ফলে উপজেলার উৎপাদিত আম ও কাঁঠাল সহ অন্যান্য ফল কোয়ারেন্টাইন কেন্দ্রের মাধ্যমে সরাসরি বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com